সামারে কেনো ব্যবহার করবেন সুথিং জেল?

বাংলাদেশের আবহাওয়া গরমে সবসময়ই একটু চ্যালেঞ্জিং। মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দীর্ঘ সময়জুড়ে গরম আর আর্দ্রতা যেন নিত্যসঙ্গী। বিশেষ করে তীব্র রোদ, ধুলোবালি, অতিরিক্ত ঘাম এবং দূষণের কারণে এ সময় আমাদের ত্বক অনেক দ্রুত ক্লান্ত ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, রোদে পোড়া, জ্বালা-পোড়া, ব্রণ, অতিরিক্ত তেল জমা, এমনকি পানিশূন্যতার সমস্যাও দেখা দেয়।

এইসব সমস্যার মাঝেই সমাধান হিসেবে সুথিং জেল একটি জনপ্রিয় নাম। অনেকেই একে “সামারের স্কিনকেয়ার হিরো” বলে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সুথিং জেল আসলে কী? কেন গরমে এটি এত প্রয়োজনীয়? এবং এর ব্যবহার থেকে আমরা কী ধরনের উপকার পাই?

এই ব্লগে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো গরমের সময়ে সুথিং জেলের নানা উপকারিতা, ব্যবহারবিধি এবং কেন এটি আপনার স্কিনকেয়ার রুটিনে থাকা জরুরি।

 

সুথিং জেল আসলে কী?

 

সাধারণত সুথিং জেল বলতে আমরা এমন একধরনের হালকা, পানিসমৃদ্ধ জেল বুঝি যেটি ত্বকে লাগালে সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা অনুভূতি দেয় এবং ত্বককে আরাম দেয়। এর সবচেয়ে পরিচিত উপাদান হলো অ্যালোভেরা। এছাড়াও শসা (Cucumber Extract), গ্রিন টি, ক্যামোমাইল, টি ট্রি অয়েল বা অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান দিয়েও তৈরি হয় সুথিং জেল।

 

এটির টেক্সচার খুব হালকা এবং ওয়াটারি, ফলে ত্বকে লাগালে দ্রুত শোষিত হয় এবং কোনোভাবেই চিটচিটে অনুভূতি তৈরি করে না। এজন্যই গরমে ভারী ক্রিম বা লোশনের পরিবর্তে সুথিং জেলই হয় সবচেয়ে আরামদায়ক বিকল্প।

 

অতিরিক্ত গরমে সুথিং জেলের উপকারিতা

 

১. ত্বকে তাৎক্ষণিক ঠান্ডা অনুভূতি আনে

রোদে এক বা দুই ঘণ্টা কাটানোর পর ত্বক গরম হয়ে যায়, অনেক সময় লালচে হয়ে চুলকানি বা জ্বালাভাব দেখা দেয়। এ অবস্থায় সামান্য সুথিং জেল ত্বকে লাগালে তাৎক্ষণিক ঠান্ডা ও আরাম পাওয়া যায়। বিশেষ করে অ্যালোভেরা সমৃদ্ধ সুথিং জেল ত্বকের জ্বালা দ্রুত কমায়।

 

২. হাইড্রেটেড করে

গরমে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বকেও। শুষ্ক, রুক্ষ আর পানিশূন্য হয়ে পড়ে ত্বক। সুথিং জেল ওয়াটার-বেসড হওয়ায় এটি ত্বকের ভেতরে আর্দ্রতা যোগায় এবং দীর্ঘক্ষণ হাইড্রেটেড রাখে।

 

৩. রোদে পোড়া ত্বককে আরাম দেয়

গরমকালে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সানবার্ন। সূর্যের ক্ষতিকর UV রশ্মি ত্বককে পুড়িয়ে দেয়, কালো দাগ বা রঙের ভিন্নতা তৈরি করে। সুথিং জেলে থাকা ভেষজ উপাদান ত্বকের এই জ্বালা-পোড়া কমিয়ে দ্রুত সান্ত্বনা দেয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষের পুনর্গঠনে সহায়তা করে।

 

৪. অয়েল কন্ট্রোল করে

গরমে ত্বকের অয়েল গ্রন্থি অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে, ফলে ত্বক চিটচিটে হয়ে যায়। সুথিং জেল ত্বকে হালকা ম্যাট ফিনিশ দেয় এবং অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে রাখে। যারা অয়েলি স্কিনে ভোগেন, তাদের জন্য এটি যেন আশীর্বাদ।

 

৫. ব্রণ ও প্রদাহ কমায়

গরমে ধুলোবালি ও ঘামের কারণে পোরস সহজেই বন্ধ হয়ে যায় এবং ব্রণের সমস্যা বেড়ে যায়। অ্যালোভেরা বা টি ট্রি অয়েল সমৃদ্ধ সুথিং জেলে থাকে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ব্রণ কমাতে সাহায্য করে এবং প্রদাহ হ্রাস করে।

 

৬. ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়

নিয়মিত সুথিং জেল ব্যবহার করলে ত্বক নরম, মসৃণ থাকে। এর মধ্যে থাকা ভেষজ উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে সহায়তা করে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে।

 

৭. বহুমুখী ব্যবহার

শুধু ফেস নয়, সুথিং জেল ব্যবহার করা যায় পুরো শরীরে, এমনকি চুলেও। গরমে মাথার ত্বকেও চুলকানি বা জ্বালা তৈরি হয়, সেখানে সুথিং জেল ঠান্ডা আরাম দেয়। এছাড়া মেকআপ বেস হিসেবেও এটি কার্যকর।

 

গরমে কেন সুথিং জেল ব্যবহার করবেন?

 

গরমে ভারী ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করলে ত্বক আঠালো হয়ে যায় এবং ঘাম বা অয়েলের কারণে ব্রণ বেড়ে যেতে পারে। অথচ সুথিং জেল—

 

দ্রুত শোষিত হয়,

হালকা ও নন-স্টিকি,

ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে,

রোদে পোড়ার পর তাৎক্ষণিক ঠান্ডা দেয়,

এমনকি ছেলেদের জন্যও সমান উপযোগী।

 

অর্থাৎ এটি একধরনের অল-ইন-ওয়ান সামার সল্যুশন।

 

সুথিং জেল ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

 

১. মুখ ভালোভাবে ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করুন।

২. পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে হালকা করে শুকিয়ে নিন।

৩. সামান্য পরিমাণ সুথিং জেল হাতে নিয়ে মুখ ও গলায় হালকা ম্যাসাজ করে লাগান।

৪. চাইলে ফ্রিজে ঠান্ডা করে ব্যবহার করলে বাড়তি রিফ্রেশমেন্ট পাবেন।

৫. রাতে শোবার আগে ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে ব্যবহার করা যায়।

 

সুথিং জেলের কিছু অতিরিক্ত ব্যবহার

 

হেয়ার মাস্ক হিসেবে: মাথার ত্বকে লাগালে খুশকি ও চুলকানি কমায়।

শেভিং-এর পর: শেভিং-এর পর ত্বকে জ্বালা হলে এটি ব্যবহার করা যায় আফটারশেভ হিসেবে।

মেকআপ বেস হিসেবে: মেকআপের আগে ব্যবহার করলে স্কিনে মসৃণ বেস তৈরি হয়।

শরীরের ত্বকে: রোদে পোড়া হাতে, গলায় বা পায়ে লাগালে ঠান্ডা আরাম মেলে।

 

কোন সুথিং জেল বেছে নেবেন?

 

  • অ্যালোভেরা বেসড সুথিং জেল সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত ও নিরাপদ।
  • ব্রণ প্রবণ ত্বকের জন্য টি ট্রি অয়েল বা গ্রিন টি যুক্ত সুথিং জেল উপকারী।
  • অতিরিক্ত ড্রাই স্কিনের জন্য শসা বা হায়ালুরোনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ জেল ভালো।
  • সবসময় প্রাকৃতিক ও অ্যালকোহল-ফ্রি জেল ব্যবহার করা উচিত, কারণ এতে ত্বকের ক্ষতির ঝুঁকি কম।
  • ১০০% ন্যাচারাল ওয়েতে তৈরি অর্গানিকাওনের স্যাফরন সুথিং জেল ইউস করতে পারেন,

যা গার্ডেনের ফ্রেশ এলোভেরা তে তৈরী করা হয় সেইসাথে এবং অর্গানিকাওনের নিজস্ব ফার্মের হারভেস্ট করা গোলাপ দেয়া হয় এই জেলে , সেইসাথে প্রাচীন রুপের রহস্য হিসেবে স্যাফরন তো রয়েছেই তাই বাজারের ভেজাল, ক্যামিকেলযুক্ত প্রোডাক্ট ইউজ না করে আপনারা ব্যবহার করতে পারেন অর্গানিকাওনের স্যাফরন সুথিং জেল । এই জেলটি অল টাইপ স্কিনে খুব সহজেই মানিয়ে যায় , ইন্সট্যান্ট একটি ঠান্ডা ফিল দেয় সেইসাথে স্কিনে আনে রেডিয়্যান্ট গ্লো। তাই সামারের বেস্ট স্কিন কেয়ার হিসেবে আপনিও রাখতে পারেন অর্গানিকাওনের এই স্যাফরন সুথিং জেলটি।  

অতিরিক্ত গরমের মৌসুমে ত্বককে সুস্থ, ঠান্ডা আর আর্দ্র রাখতে সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায় হলো সুথিং জেল। এটি শুধু তাৎক্ষণিক রিফ্রেশমেন্টই দেয় না, বরং দীর্ঘমেয়াদে ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।

তাই এই সামারে যদি এখনো আপনার স্কিনকেয়ার রুটিনে সুথিং জেল যুক্ত না হয়ে থাকে, তবে আজ থেকেই ব্যবহার শুরু করতে পারেন। এটা হতে পারে সামারে আপনার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সঙ্গী।

Author