এই গরমে পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের টোটাল স্কিন কেয়ার, জানলে উপকার হবে আপনারও।

আমরা সবাই সুন্দর ত্বক পছন্দ করি।সেটা নারী বা পুরুষ যেই হোকনা কেন।যদিও ত্বক নিয়ে কথা এলে আমাদের মানসপটে প্রথমেই নারীচিত্রই বেশি মনে আসে।কিন্তু ব্যাপারটা নিশ্চয়ই সেরকম নয়।নারী পুরুষ সবার ক্ষেত্রেই তো নানারকম ত্বকের সমস্যা হতেই পারে।

বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বকের ব্যাপারটা যখন আসে তখন পুরুষের সংখ্যাটাও কিন্তু নেহায়েতই কমও নয় যারা এই সমস্যার ভুক্তভোগী নন।পুরুষদের ক্ষেত্রেও তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যাটা বেশ ভালোভাবেই হয়।আজ আমরা পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা কেন হয়,কি ধরনের প্রডাক্টস ব্যবহার করতে পারে এই জাতীয় নানা কিছু বিষয় জানতে চেস্টা করবো।

 

পুরুষদের ত্বক ঠিক কি কি কারনে তৈলাক্ত হতে পারে?

পুরুষদের ত্বকের ধরন নারীদের থেকে তুলনামুলক আলাদা।সাধারনত পুরুষদের ত্বকের সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ডটি নারীদের থেকে তুলনামুলক বড় হয়ে থাকে । সেজন্য পুরুষদের ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি বেশি ঘটে।আবার পিওবার্টিকালীন সময়ে পুরুষদের সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে টেস্টোস্টেরন হরমোন অনেক বেশি পরিমান নিঃসরিত হয় এবং সে কারণে এই সময়টাতে পুরুষদের ত্বক অনেক বেশি মাত্রায় তৈলাক্ত হয়।

আবার যেহেতু পুরুষদেরকে তুলনামুলক ভাবে বেশি সময় বাইরে কাটাতে হয় তাই তাদের ত্বকে ধুলো ,ময়লা ,দূষণ এগুলোর আক্রমণও তুলনামুলক বেশি ঘটে এবং এতে করে ত্বকের তৈলাক্ততা আরো বাড়িয়ে তোলে।পরবর্তিতে সেটা ব্রণ,একজিমা এবং রোজাশিয়ার দিকে টার্ণ করতে পারে।এগুলো ছাড়াও অতিরিক্ত সেবাম প্রডাকশন,বংশগত কারণে,ডায়েট এবং পরিবেশগত কারনেও পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যার ব্যাপারটা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে স্কিনকেয়ার রুটিন:

আমরা অনেকেই দেখে থাকি যে পুরুষরা ত্বকের যত্নের ব্যাপারে নারীদের তুলনায় কিছুটা কম সময় ব্যয় করতে চান।সেটা তাদের ব্যস্ততার কারনেই হোক বা অনেকটা বেশি সময় বাহিরে অবস্থানের কারনেই হোক পুরুষদের ত্বকের যত্ন নেবার প্রয়াসটা স্বভাবগতভাবেই কিছুটা কমই হয়।যদিও যারা সচেতন তারা নিজেদের জন্য কিছুটা সময় ঠিকই বের করে নেন। তো,দেখা যায় যে এই গরমে পুরুষদের ত্বক আরো একটু বেশি আক্রান্ত হয়।কারন হিসেবে আমরা বলতে পারি যে গরম আবহাওয়া,ধুলো,ময়লা ইত্যাদির প্রকোপ এই সিজনে তুলনামুলক অনেক বেশি থাকে।কিন্তু দিনশেষে ত্বক তো আপনার।যত্ন তো নিতে হবে।নাহলে ধীরে ধীরে অতিরিক্ত তৈলাক্ততার সাথে  ত্বকে আরো নানামুখী সমস্যা তৈরী হবে।

এই গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নিতে যেয়ে পুরুষদের জন্য একটা পারফেক্ট স্কিনকেয়ার রুটিন খুবই প্রয়োজন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি কেমিক্যালবিহীন,অর্গানিক ন্যাচারাল উপাদান এবং উপাদান সমৃদ্ধ প্রডাক্ট ব্যাবহার করা যায়।চলুন তাহলে আজ আমরা জানবো যে এই গরমে পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের জন্য পারফেক্ট একটা স্কিন কেয়ার রুটিন কি হতে পারে এবং সেগুলো কিভাবে ফলো করলে বেস্ট রেজাল্ট পাওয়া যেতে পারে।


স্টেপ ১: ক্লিনজিং

এই গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে সবচেয়ে জরুরি ব্যাপার হলো ক্লিনজিং।আর যেহেতু পুরুষদেরকে দিনের বেশির ভাগ সময়ই বাইরে কাটাতে হয় তাদের ত্বকে ধুলো ময়লার আক্রমণটাও বেশি হয়।তাই ক্লিনজিং অত্যন্ত জরুরি একটা বিষয়।অন্ততপক্ষে দিনে দুবার ত্বক খুব ভালোভাবে ক্লিন করা প্রয়োজন।
ক্লিনজিং এর জন্য অর্গানিকাওন স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ড এর রয়েছে চমৎকার একটি প্রডাক্ট। সেটা হলো অর্গানিকাওনস চারকোল সোপ।

একটিভেটেড চারকোলের সাথে গ্লিসারিন এবং আরো অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদানের সমন্বয়ে তৈরী এই চারকোল সোপটি ত্বকের একদম গভীরে যেয়ে পরিস্কার করে আনবে,ত্বকের অশুদ্ধতা দূর করবে এবং ত্বকের ওপরে জমে থাকা তেল ময়লা ডিপলি ক্লিন করবে।পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এই সোপটি খুব চমৎকার ভাবে কাজ করে।
প্রতিদিন সকালে কাজে যাবার আগে এবং রাতে বাসায় ফিরে এই ক্লিনজার হিসেবে এই সাবানটির ব্যবহার তৈলাক্ত ত্বকের ধুলো ময়লা আবর্জনা অনেকটাই নির্মূল করবে।তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে,এই ক্লিনজিং এর সময় কোনভাবেই গরম পানি ত্বকে ব্যবহার করা যাবেনা।

স্টেপ ২: এক্সফোলিয়েটিং বা ত্বকের মৃত চামড়া,ডেড সেল পরিস্কার করা:

এই গরমে পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নেবার লিস্টে ত্বক একদম গভীর থেকে পরিস্কার করাটা অন্যতম একটা জরুরি স্টেপ।কারণ ত্বকের মৃত চামড়া , ব্রণাক্রান্ত ত্বকে হওয়া ব্রণের গুটি বা শুস্ক হয়ে ক্ষয়ে যাওয়া অংশ ইত্যাদি ভালোভাবে পরিস্কার করে নিয়ে আসার জন্য এক্সফোলিয়েটিং ব্যপারটা অনেক জরুরি।বাজারে এই জন্য অনেক ধরনের স্ক্রাবার বা অন্যান্য প্রডাক্ট পাওয়া যায়।কিন্তু অন্ধের মত সব ব্যবহার করা ঠিক নয়। কেমিক্যাল বিহীন এবং ন্যাচারাল উপাদান সমৃদ্ধ স্ক্রাবার সিলেক্ট করতে হবে।

এজন্য আমরা আপনাদেরকে সাজেস্ট করতে পারি চমৎকার একটি স্ক্রাবার।সেটা হল অর্গানিকাওনের একনি রিমুভিং প্যাকটি।অনেকগুলো উপকারী উপাদানের পাশাপাশি এটাতে যোগ হয়েছে মরিঙ্গা গুড়ো,মসুর ডালের গুড়ো,কস্তুরী হলুদ গুড়ো,নিম গুড়ো,দারুচিনি গুড়ো,মন্জিস্ঠা গুড়ো ইত্যাদি। এ সমস্ত কারনে এটি হয়ে উঠেছে একটি দূর্দান্ত এন্টিব্যাকটেরিয়াল,এন্টিঅক্সিডেন্টাল এবং সুপার অয়েল রিমুভার।

সপ্তাহে অন্তত একদিন এই স্ক্রাবারটির ব্যবহার এই গরমে পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের অনেকটাই পুরণ করে তুলবে।এটি ত্বকের একদম ভেতরে ঢুকে অশুদ্ধতা দূর করে আনবে,মৃত কোষ সরিয়ে ফেলবে,ব্রণের মুখ ছোট করে আনবে,ব্রণের কারনে  হওয়া পোরস এর ওপরকার চামড়া বা রেসিডুয়ালসগুলো ভালোভাবে তুলে পরিস্কার করে নিয়ে আসবে।

পুরুষরা যেহেতু তুলনামুলক কম সময় পান তাই সপ্তাহে অন্তত একদিন তো এটি ব্যবহার করতেই হবে।আপনারা আমাদের অর্গানিকাওনের পেজ থেকে এটি চাইলে নিতে পারেন।


স্টেপ ৩ : ময়েশ্চারাইজিং:

অনেক পুরুষরা হয়তো ভাবতে পারেন যে,ত্বক তো এমনিতেই তৈলাক্ত হয়েই আছে।তাহলে বোধহয় ময়েশ্চারাইজিং এর কোন প্রয়োজন নেই।আসলে কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়।তৈলাক্ত ত্বকে তো এক্সট্রা তৈল আটকে রয়েছে,সেটাকে তো ময়েশ্চার বলা যাবেনা।তাই এই গরমে পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অর্গানিক ও ন্যাচারাল উপাদান সমৃদ্ধ ভালো মানের একটা ময়েশ্চারাইজিং প্রডাক্ট খুবই জরুরি।

আর যেহেতু পুরুষেরা থাকেন অনেক বিজি  থাকেন তাই এমন একটা প্রডাক্ট হওয়া উচিত যেটার ব্যবহার করাও খুব সহজ।তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি নানাবিধ প্রাকৃতিক উপাদানে সমৃদ্ধ একটি চমৎকার ময়েশ্চারাইজার।সেটা হলো অর্গানিকাওনের স্যাফ্রন গোট মিল্ক সোপছাগলের দুধের সাথে স্যাফ্রন এর সমন্বয়ে তৈরী দূর্দান্ত এই ময়েশ্চারাইজিং সোপটিতে আরো রয়েছে শিয়া বাটার,লিকোরাইস এক্সট্র্যাক্ট ইত্যাদি।তৈলাক্ত ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করে,ত্বককে করে তোলে কোমল মসৃণ এবং লাবন্যময়।আর ব্যবহার করাও খুবই সুবিধাজনক।সামান্য পরিমানে নিয়ে ত্বকে মেখে নিয়ে ভালোভাবে ডলে পরিস্কার পানি দিয়ে ত্বক ক্লিন করে নিলেই হয়ে গেলো তৈলাক্ত ত্বকের ময়েশ্চারাউজিং।

অর্গানিক,প্রাকৃতিক ও হালাল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে অর্গানিকাওনের স্যাফ্রন গোট মিল্ক সোপটি আপনারা চাইলে নিজেদের জন্য চুজ করতেই পারেন।

স্টেপ :৪: টোনিং:

পুরুষরা সাধারনত পছন্দ করেন এমন কেয়ার যেটা নিতে তেমন বেশি সময় লাগেনা।এই গরমে পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে টোনিং অত্যন্ত জরুরি একটি স্টেপ।বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে নিদ্রিস্ট কিছু টোনার রয়েছে যা অনেক চমৎকার ফলাফল দেয়।

অর্গানিকাওনের রয়েছে দারুন কার্যকরী দুটি টোনার যা পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে অনেক ভালো কাজ করে।সেগুলো হলো উইচ হেজেল টোনার এবং গ্রীন টি টোনার বা গ্রীন টি ফেস মিস্ট।উইচ হেজেল টোনারটিতে রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিঅক্সিডেন্টাল গুনাবলি যা তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে একদম পারফেক্ট।আর গ্রীন টি টোনারটি তৈলাক্ত ত্বকের তৈলাক্ততা কমিয়ে তোলে,ত্বক উজ্জল করে,ত্বকের কালচে দাগ দূর করে।

অল্প সময়েই এগুলো ইউজ করা যায় এবং ব্যবহারবিধি ও অনেক সহজ। কটন বলে লাগিয়ে বা সরাসরি ত্বকে স্প্রে করে খুব ইজিলি এপ্লাই করা যায় বিধায় টোনারগুলো ব্যাস্ত পুরুষদের রুটিন কেয়ার লিস্টের অন্যতম অনুষঙ্গ বলা যায়।

এই গরমে পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নেবার জন্য এই স্টেপগুলো মানতে হবে, সেটা কিছুটা কস্ট করে হলেও।আর হালাল,অর্গানিক এবং ন্যাচারাল প্রডাক্টসগুলো নিজেদের জন্য নিতে চাইলে আপনারা আমাদের অর্গানিকাওনের পেজ থেকে নিতে পারেন।

যেহেতু বাইরে যেতেই হবে তাই এই গরমে আরো কিছু কিছু ব্যাপারের প্রতি নজর রাখতে হবে।

 

১.বাইরে গেলে অবশ্যই চেস্টা করতে হবে ত্বককে প্রখর সূর্যালোক থেকে যতটুকু সম্ভব প্রটেক্ট রাখার।সেজন্য বড় ক্যাপ,ছাতা,স্কার্ফ, সানগ্লাস ইত্যাদি ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে ভালো।
২.যদিও কিছুটা সময় পর পর ত্বক পানি দিয়ে ধুতে পারলে ভালো কিন্তু যেহেতু পুরুষরা যেহেতু অনেকটা সময়ই বাইরে কাটান তাই তারা হয়তবা সব সময় এটা করে উঠতে পারেন না।সেজন্য আমাদের কাছে রয়েছে চমৎকার দুটি টোনার যা আপনারা পানির পরিবর্তে স্প্রে হিসেবে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।সেগুলো হলো অর্গানিকাওনের রোজ এসেন্স টোনার এবং লেমনগ্রাস এন্ড পেপারমিন্ট টোনার।এগুলো কটন বলে লাগিয়ে ত্বকে এপ্লাই করতে পারেন বা ত্বকে ডিরেক্টলি স্প্রে করে আলতো হাতে মুছে নিতে পারেন।নিমিষেই পাবেন ফ্রেশ একটা ভাইবস এবং পাশাপাশি ত্বকে দেবে নানারকম উপকারিতা।
৩.প্রচুর পরিমান বিশুদ্ধ পানি,ফল মুল শাক সব্জি খেতে হবে।
৪.পর্যাপ্ত সময় ঘুমাতে হবে।
৫.বেশি সমস্যা মনে করলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

তৈলাক্ত ত্বক মানেই আলাদা কিছু বাড়তি যত্ন।আর যেহেতু পুরুষরা বেশির ভাগ সময় বাইরেই কাটাতে হয় তাই তাদের জন্য ত্বকের যত্ন নেয়াটা কিছুটা সমস্যা হয়ে যায়। কিন্তু মিনিমাল কেয়ারটুকু তো নিতেই হবে।তাই এই গরমে পুরুষদের তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে দিতে হবে কিছুটা এক্সট্রা সময় ও যত্ন।আর আপনার যত্নের সঙ্গী হয়ে আমরা অর্গানিকাওন আছি আপনার পাশে।

আজ এ পর্যন্তই।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থতার সাথে।