স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট বা রুটিন সবার জন্য সেইম হয় না। একই প্রোডাক্ট একজনের ক্ষেত্রে পজিটিভ রেজাল্ট দিলেও অন্যজনের ক্ষেত্রে নেগেটিভ হতে পারে। আগে থেকে স্কিন টাইপ জানা থাকলে ও প্রোফার প্যাচ টেস্ট এর মাধ্যমে এ ক্ষতি এড়ানো সম্ভব। ত্বকের ধরন আগে থেকে জানা থাকলে এর উপযোগী করে স্কিনকেয়ার রুটিন ডেভেলপ করা যায় ও প্রোডাক্ট সিলেক্ট করা যায় যা একটি হেলদি ও রেডিয়েন্ট স্কিন তৈরিতে সহায়তা করে। এখন প্রশ্ন হলো, কিভাবে স্কিন টাইপ নির্ধারন করা যায়? এর জন্যে কি ডার্মাটোলজিস্টের কাছে যেতে হবে নাকি বাসায় থেকেই এটি করা যায়। উত্তর হলো, আপনি নিজে নিজেই ব্লটিং পেপার টেস্ট ও বেয়ার ফেইস টেস্ট করে আপনার স্কিন টাইপ জানতে পারবেন।
Blotting Paper Test এর সাহায্যে স্কিন টাইপ নির্ণয়
ত্বকের ধরণ নির্ধারনে ব্লটিং পেপার টেস্ট ওয়ার্ল্ডওয়াইড খুবই পরিচিত। ব্লটিং পেপার হলো টিস্যুর মতো এক ধরনের পাতলা পেপার যা তেল শোষন করে। daraz বা অন্য কোনো অনলাইন শপ থেকে মোটামুটি ২০০টাকা দিয়ে এই পেপার কিনতে পারবেন।
ব্লটিং পেপার দিয়ে টেস্ট করার জন্যে প্রথমে ফেইস, মাইল্ড একটি ক্লিনজার দিয়ে ধুয়ে নিন। ক্লিনজারটি যেন আর্টিফিসিয়াল ফ্রাগর্যান্স ফ্রী হয়। এরপর ৩০মিনিট কোনো প্রোডাক্ট ইউজ করবেন না। রুমের তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখুন যেন এটি অনেক বেশি উষ্ণ বা ঠান্ডা না হয়। মোটামুটি ২২ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকলে ফলাফল বায়াসড হবে না। এবার ব্লটিং পেপার মুখের বিভিন্ন অংশে চাপ দিয়ে ধরুন বিশেষ করে কপাল, নাক, গাল এই অংশগুলোতে। ৩০সেকেন্ড থেকে ১মিনিট রেখে এরপর উঠিয়ে নিন। লাইটের আলোয় এটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করুন।
১. যদি ব্লটিং পেপারের প্রায় সব অংশেই তেল দেখা যায় তাহলে সেটি অয়েলি স্কিন নির্দেশ করে।
২. বিপরীতভাবে যদি ব্লটিং পেপারের কোনো অংশেই তেল পাওয়া না যায় তবে সেটি ড্রাই স্কিন নির্দেশ করে।
৩. যদি টি জোনে থাকা পেপারে তেল থাকে বাকি অংশ তেলবিহীন থাকে তাহলে সেটা কম্বিনেশন স্কিন।
৪. আর যদি সম্পূর্ন ব্লটিং পেপার খুবই সামান্য পরিমানে অয়েল থাকে যা অনেকটা শুকনা মতো দেখতে হয় তাহলে সেটি কমপ্লিটলি নরমাল স্কিন।
Bare Faced Test এর সাহায্যে স্কিন টাইপ নির্ণয়
মেকাপ বা অন্য যেকোনো স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টমুক্ত ফেইস হলো বেয়ার ফেইস। এই টেস্টের সাহায্যে আপনি চাইলে ঘরে বসে স্কিন টাইপ সম্পর্কে জানতে পারেন।
বেয়ার ফেইস পরীক্ষা করার জন্যে প্রথমে আপনার মুখমন্ডল ফ্রাগর্যান্সমুক্ত জেন্টল ক্লিনজার দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। থার্টি মিনিটের জন্যে সকল স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ইউজ করা অফ রাখুন। লক্ষ্য করুন আপনার কেমন আনুভূতি হচ্ছে।
১. যদি স্কিন টানটান ও ফ্ল্যাকি মনে হয় তবে এটি ড্রাই স্কিন হতে পারে।
২. যদি স্কিন চকচকে হয় তবে এটি অয়েলি স্কিন।
৩. শুধু টি জোন শাইনি মনে হলে তা কম্বিনেশন স্কিন।
৪. নরমাল স্কিনে কোনোরুপ টানটান,ফ্ল্যাকি বা অয়েলি হবে না। এটি কম্পোর্টেবল হবে।
এই দুই টেস্টের সাহায্যে আমরা ড্রাই, অয়েলি, কম্বিনেশন ও নরমাল স্কিন ডিটারমাইন করতে পারলেও সেনসিটিভ স্কিন পারবো না। সেনসিটিভ স্কিন নির্ণয়ে আরও গভীর পর্যবেক্ষন দরকার।
রিয়েকশন পর্যবেক্ষন করুনঃ খেয়াল রাখুন নতুন কোনো পণ্য, ইনগ্রিডিয়েন্ট, আবহাওয়া( গরম বা ঠান্ডা), স্ট্রেস এর প্রতি স্কিন কোনো রিয়েক্ট করে কিনা। এই রিয়েকশন ইচিং, রেডনেস, বার্নিং, ড্রাইনেস ইত্যাদির সাহায্যে প্রকাশ পেতে পারে।
ট্রিগার ট্র্যাকিং করুনঃ যখনই কোনো রিয়েকশন দেখতে পাবেন, তখনই এর পেছনের কারন উদঘাটন করার ট্রাই করুন।
প্যাচ টেস্ট করুনঃ নতুন কোনো প্রোডাক্ট ইউজের পূর্বে প্যাচ টেস্ট করুন। প্যাচ টেস্ট এর রেজাল্ট সংরক্ষণ করুন।
বাসায় করা আপনার এই পর্যবেক্ষনগুলো একজন ডার্মাটোলজিস্টকে হেল্প করবে আপনার স্পেসিফিক সেনসিটিভিটি ডিটারমাইন করতে। এছাড়া স্কিন স্পেশালিস্ট আপনার Prick test করতে পারে স্পেসিফিক এলার্জেন নির্ণয় করতে।
আশা করি এখন আপনারা বাসায় বসেই স্কিন টাইপ আইডেন্টিফাই করতে পারবেন। কোনো প্রশ্ন থাকলে জানিয়ে দিন কমেন্ট বক্সে।
Leave a comment