Description
সানস্ক্রিন নিয়ে যা আপনার জানতেই হবে:
সানস্ক্রিন কি সেটা আশা করি আর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নাই।
শুরুতে জেনে নেই সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে কি হয়?
১. সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে মেসতা হওয়ার সম্ভাবনা ৫০% বেড়ে যায়।
২. কম বয়সে ফেইস এ বসের ছাপ পড়ে যায়।
৩. স্কিন ক্যান্সার হয় এবং স্কিন ড্যামেজ হয়।
৪. স্কিন বার্ন হয় এবং পিগমেন্টেশন বেড়ে যায়।
আরও অনেক কিছু হয়, ব্যাসিক গুলো বললাম।
তাহলে বুঝতেই পারছেন সানস্ক্রিন ব্যবহার করা কতটা জরুরী।
( লিখাটা ধৈর্য্য ধরে পড়লে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন আপনার কোন সানস্ক্রিন ব্যবহার করা প্রয়োজন)
পয়েন্টঃ১
মিনারেল নাকি ক্যামিক্যাল?
সানস্ক্রিনের ইনগ্রেডিয়েন্ট এর উপর ভিত্তি করে দুই ধরনের সানস্ক্রিন হয়।
১. মিনারেল সানস্ক্রিন
২. কেমিক্যাল সানস্ক্রিন
মিনারেল সানস্ক্রিন সূর্যের UV রশ্নিকে ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করতে দেয় না। ত্বকের উপরের লেয়ার থেকেই UV রশ্নিকে রিফ্লেক্ট করে। মিনারেল সানস্ক্রিনে অ্যাক্টিভ জিংক অক্সাইড বা টিটানিয়াম অক্সাইড ব্যবহার করা হয়। মিনারেল সানস্ক্রিন যেহেতু UV কে ত্বকে প্রবেশ করতেই দেয় না, তাই এটিকে সানব্লকও বলা হয়।
অন্যদিকে কেমিক্যাল সানস্ক্রিন কাজ করে ত্বকের ভিতর থেকে। ত্বকে সূর্যের UV রশ্নি প্রবেশের পর ক্যামিক্যাল সানস্ক্রিন সেই UV রশ্নিকে তাপ এ রুপান্তর করে ত্বক থেকে বের করে দেয়। এই জন্য স্কিনভেদে সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পর অনেকের খুব ঘরম লাগে এবং অনেক ঘাম হয়। এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যপার।
তারমানে ঘাম হওয়া সান প্রোটেকশনের একটা অংশই বটে।
তাহলে প্রশ্ন হল কোনটা ব্যবহার করব?
সেনসিটিভ স্কিন সহ সব স্কিনের জন্য মিনারেল সানস্ক্রিন রেকমেন্ড করা হয়। কারণ মিনারেল সানস্ক্রিন ত্বকের বাহির থেকে কাজ করে।
বর্তমানে বেস্ট প্রোটেকশনের জন্য কিছু কিছু সানস্ক্রিনে মিনারেল এবং কেমিক্যাল ২ ধরনের ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করা হয়। প্রধান ইনগ্রেডিয়েন্ট থাকে মিনারেল ইনগ্রেডিয়েন্ট।
এখানে একটা বিষয় বলে রাখি, পৃথিবীর কোন সানস্ক্রিন ১০০% সান প্রোটেক্টর না। সর্বোচ্ছ ৯৮% সূর্যের ক্ষতিকর UV রশ্মি থেকে প্রোটেক্ট করে।
এই কারণে কিছু সানস্ক্রিনে এখন কেমিক্যাল এবং মিনারেল ২ ধরনের ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করা হয় যাতে মিনারেল ইনগ্রেডিয়েন্ট বাহির থেকে প্রোটেক্ট করার পর সামান্য ২/৩% যে UV রশ্মি ত্বকে প্রবেশ করে, ভিতরের কেমিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট যেন সেই ২/৩% থেকেও ত্বককে প্রোটেক্ট করে।
এই সানস্ক্রিন সবচেয়ে বেস্ট।কারণ বাহির থেকে ৯৭/৯৮% প্রোটেক্ট করার পর যে ২/৩% ভিতরে প্রবেশ করে, সেটাকেও প্রিভেন্ট করে ভিতরের কেমিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট। এই ধরনের সানস্ক্রিনে মিনারেল ইনগ্রেডিয়েন্ট প্রধাণ ইনগ্রেডিয়েন্ট হিসেবে থাকে।
অর্গানিকাওনের সানস্ক্রিন হবে মিনারেল এবং কেমিক্যাল উভয়ের সমন্বয়ে। যেন ত্বক সর্বোচ্ছ প্রোটেকশন পায়।
পেয়েন্টঃ২
SFP:
SPF= Sun Protection Factor
সান প্রোটেক্টশন ফ্যাক্টর হল স্কিন বার্ন হওয়ার জন্য কতগুণ সময় লাগবে। কোন সানস্ক্রিনের যদি SPF ৩০ হয়, তাহলে রোদে স্কিন বার্ন হতে নরমাল স্কিনের চেয়ে ৩০ গুন বেশি সময় লাগবে।
অর্থাৎ, সানস্ক্রিন ছাড়া স্কিন বার্ন হতে যদি ৫ মিনিট সময় লাগে, SPF-30 যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ৫*৩০=১৫০ মিনিট সময় মানে আড়াই ঘন্টা লাগবে। মানে আড়াই ঘন্টা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সেফ থাকবেন।
উপরেও বলেছি, কোন সানস্ক্রিন ১০০% প্রোটেকশন দেয় না।
SPF-15 সূর্যের ৯৩% রশ্মি প্রিভেন্ট করে।
SPF-30 সূর্যের ৯৭% রশ্মি প্রিভেন্ট করে।
SPF-50 সূর্যের ৯৮% রশ্মি প্রিভেন্ট করে।
সর্বনিম্ন SPF-30 রেকমেন্ড করা হয়।
বেস্ট হচ্ছে SPF-50 ব্যবহার করা।
অর্গানিকাওনের সানস্ক্রিন হবে SPF-50 এর।
পয়েন্টঃ৩
ব্রডস্পেক্ট্রামঃ
এটা খুব খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ।
সূর্যের তিন ধরনের রশ্মি নির্গত হয়।
UV-A: আমাদের ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করে DNA ডামেজ করে। স্কিন ক্যান্সার হতে পারে। এবং এটা ত্বকের কোলাজেন প্রোটিন ভেঙ্গে দ্রুত অ্যাজিং নিয়ে আসে। যার কারণে অনেকের দেখা যায় ৩০ বছর বয়সেই ত্বক ঝুলে যায় ৫০ বছর বয়সীদের মত।
UV-B: সূর্যের এই রশ্মি আমাদের ত্বককে বার্ন করে ফেলে। ত্বক জ্বলে যায় এবং ট্যান পড়ে।
UV-C: খুশির কথা হল এই রশ্মি আমাদের বাুমন্ডল ভেদ করে ভূ-পৃষ্ঠে আসতেই পারেনা।
সুতরাং, UV-A এবং UV-B হল মেইন কালপ্রিট।
এখন অগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, অনেক সানস্ক্রিন শুধুমাত্র UV-B থেকে প্রোটেক্ট করে, কিন্তু UV-A থেকে প্রোটেক্ট করেনা।
এমন সানস্ক্রিন ব্যবহার করে প্রকৃতপক্ষে কোন লাভ হয়না বরং আপনাকে মারাত্মক ক্ষতির মুখে ফেলে দেয়।
কারণ আপনি সানস্ক্রিন ব্যবহার করেছেন মনে করে নিশ্চিন্তে রোদে ঘুরে বেড়িয়েছেন, UV-B থেকে রক্ষা পাইছেন, মানে ত্বক পোড়ে যায় নাই। কিন্তু UV-A থেকে রক্ষা পান নাই। অজান্তেই দিনের পর দিন স্কিন ভিতরে ড্যামেজ হয়েছে। ২৮/৩০ বছর না হতে দেখা গেল ত্বক ঝুলে পড়েছে। স্কিন ক্যান্সাে সহ নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
কারণ কি?
কারণ হল আপনি শুধুমাত্র UV-B থেকে প্রোটেক্ট করে নিজেকে নিরাপদ ভেবে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়িেছেন।
তাহলে মূল আলোচনায় ফিরে আসি, ব্রড স্পেক্ট্রাম মানে হল UV-A এবং UV-B দুইটাকেই প্রিভেন্ট করবে।
কোন সানস্ক্রিন ব্রড স্পেক্ট্রাম মানে হল সূর্য থেকে পুরোপুরি সেফটি দিবে। মানে A ও B দুইটাকেই প্রতিরোধ করবে।
“অর্গানিকাওনের সানস্ক্রিন হবে ব্রড স্পেক্ট্রাম সানস্ক্রিন”
পয়েন্টঃ৪
PA+++
PA means Protection from UV-A.
এটা নিয়ে ব্রড স্পেক্ট্রাম এর মধ্যেই পড়ে। আলাদা করে বুঝিয়ে বলি। বাংলাদেশে কেউই এটা নিয়ে বিস্তারিত বলেনা।
PA মূলত UV-A থেকে কতটুকু প্রোটেক্ট করে, তার একটা গ্রেডিং সিস্টেম যেটা জাপানে প্রথম শুরু হয়েছিল। একটা সানস্ক্রিন কতটুকু ক্ষতিকর UV-A থেকে প্রোটেক্ট করবে, তার একটা গ্রেডিং। গ্রেডিং পয়েন্ট বের করা হয় একটা টেস্টের মাধ্যমে যাকে বলে পারসিস্টেন্ট পিগমেন্ট ডার্কেনিং (পিপিডি-PPD)
পিপিডি মেথডে PA এর গ্রেডিং নির্ণয় করা হয়।
যদি PPD= 2-4 হয়, তাহলে PA+
যদি PPD= 4-8 হয়, তাহল PA++
যদি PPD= 8-16 হয়, তাহলে PA+++
PA+ মানে আপনার সানস্ক্রিন UV-A থেকে সামন্য সেভ করবে আপনাকে।
PA++ মিডিয়াম লেভেলের প্রোটেকশন দিবে।
PA+++ বেস্ট প্রোটেকশন দিবে।
” পিপিডি টেস্টে অর্গানিকাওনের সানস্ক্রিন PA+++”
এত সব টেস্টের জন্যই সানস্ক্রিন আনতে আমাদের এত দেরি হয়েছে।
পয়েন্টঃ৫
ন্যানো এবং নন-ন্যানো জিংক অক্সাইড :
খুবই গুরুত্বপূর্ণ অথচ কেউ আপনাকে এটা নিয়ে কিছু বলবেনা। আপনি উপরের সবগুলো শুনে থাকলেও এটা কারও কাছে শুনেন নাই আমি শিওর।
মিনারেল সানস্ক্রিনের মেইন উপাদান অ্যাক্টিভ জিংক অক্সাইড। জিংক অক্সাইড এর মলিকিউল গুলোর সাইজ কতটুকু?
মিলিকিউলের মত ক্ষুদ্র কণার সাইজ মাপা হয় ন্যানো মিটারে। বাজারের অলমোস্ট সব সানস্ক্রিনে ন্যানো জিংক অক্সাইড ব্যবহার করা হয়। যেটা ত্বকের ডিপ লেয়ারে প্রবেশ করতে পারে। যার কারণে ইরিটেশন, এলার্জিক রিয়েকশন সহ কিছু সাইড ইফেক্ট হতে পারে।
এই জন্য এই বিষয়টা সবাই এড়িয়ে যায়
আরেকটা জিংক অক্সাইড আছে, যেটার সাইজ একটু বড়, এবং এটাকে নন-ন্যানো জিংক অক্সাইড বলা হয়।
নন-ন্যানো জিংক অক্সাইড ত্বকের ডিপ লেয়ারে প্রবেশ করতে পারেনা। যার কারণে ত্বক থাকে সম্পূর্ণ সেফ।
অনেক রিসার্চ করে অর্গানিকাওন টীম অর্গানিকাওনের সানস্ক্রিনে ‘নন-ন্যানো জিংক অক্সাইড’ ব্যবহার করেছে।
যার কারণে কস্টিং এ একটু বেশি হয়েছে।
পয়েন্টঃ৬
এখানে অনেকগুলো একসাথে আলোচনা করব।
প্রথম ৫ টা গুরুত্বপূর্ণ।
১ থেকে ৪ বাধ্যতামূলক।
৫ নাম্বারের গুরুত্ব আপনারা নিজেরাই বুঝতে পেরেছেন।
৬ নাম্বারেরগুলো হবে এক্সট্রা সুবিধা।
৬.১-শুরুর পয়েন্টা বলি। এটা নিয়ে অনেকেই বলেছেন যে সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে যে সাদা আবরণ পড়ে, যেটা খুবই খারাপ লাগে। জিংক অক্সাইড মূলত সাদা হয়। এই কারণে সাদা আবরণ হয়। যদি ট্রান্সপারেন্ট জিংক অক্সাইড ব্যবহার করা হয়, তাহলে এমন আবরণ হবে না। যেটা একটু ব্যায়বহুল।
“অর্গানিকাওনের সানস্ক্রিনে ট্রান্সপারেন্ট জিংক অক্সাইড ব্যবহার করা হয়েছে, যার কারণে কোন হোয়াইট কাস্ট হবেনা”
৬.২- নন-অয়েলি, নন-গ্রিজি:
অয়েল ফ্রি সানস্কস্ক্রিনে ত্বক তেল চিটচিটে হয় না এবং পোর ক্লক হয় না।
” অর্গানিকাওনের সানস্ক্রিন নন কমেডোজেনিক, অয়েল প্রি এবং নন-গ্রিজি”
৬.৩- ওয়াটার প্রুপ এবং ঘাম প্রুফ:
ঘাম প্রুফ হলে ঘাম হওয়ার পরও সানস্ক্রিন ধুয়ে যাবেনা। এবং ২ ঘন্টার আগে আবার অ্যাপ্লাই করা লাগবে না
” অর্গানিকাওনের সানস্ক্রিন সোয়েট প্রুফ ও ওয়াটার প্রুফ”
৬.৪-
ময়েশ্চারাইজিং :
খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই বলেছেন সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে কেমন ড্রাই হয়ে যায় স্কিন। আবার আলাদা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয়।
সানস্ক্রিন যদি ময়েশ্চারাইজিং হয়, তাহলে এই সমস্যা হয় না।
অর্গানিকাওনের সানস্ক্রিনে Hayaluronic Acid ব্যবহার করা হয়েছে। এটি এমন একটি ইনগ্রেডিয়েন্ট যেটি আমাদের স্কিনের জন্য খুবই উপকারি এবং এটি খুব মাইল্ড একটা ইনগ্রেডিয়েন্ট। এটি ত্বককে খুব ভালভাবে হাইড্রেটেড রাখে। ত্বককে সফ্ট এবং ময়েশ্চারাইজ রাখে এবং একটা গ্লাসি স্কিন লুক দেয়। অর্গানিকাওনের সানস্ক্রিন ব্যবহারে ত্বক ময়েশ্চারাইজ থাকবে।
৬.৫-লাইট ওয়েট:
এটাও অনেকের জন্য সমস্যা। সানস্ক্রিন একটু লাইট ওয়েট হলে ব্যবহার করে খুব হালকা এবং ফ্রেশ লাগে। নাহয় কেমন যেন একটা অসহ্যকর লাগে।
” অর্গানিকাওনের সানস্ক্রিন হবে খুবই লাইট ওয়েট।
সানস্ক্রিন নিয়ে আর কিছু বাকি আছে বলে মনে হয় না। আমি সবগুলো বিষয় খুব সহজ করে আলোচনা করা চেষ্টা করেছি। যেখান থেকেই সানস্ক্রিন কিনেন, উপরের বিষয়গুলো মাথায় রেখে কিনবেন।
আর যদি কোন বিষয় বাদ থাকে, তাহলে আপনার কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
Reviews