ব্রণ যুক্ত ত্বকে ওয়াক্সিং করার কিছু টিপস যা না জানলেই নয়।

ব্রণ(একনি) সমস্যায় পড়েনি এমন ভাগ্যবান মানুষের সংখ্যা নেহায়েতই কম।জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে কম বেশি সবাই ই আমরা এই সমস্যার ভুক্ত ভোগী হই।

তাই বলে কি ত্বকের যত্ন নেবার স্টেপগুলো বাদ যাবে?

নিশ্চয়ই নয়।ত্বকের যত্নের অন্যতম একটা স্টেপ হলো ওয়াক্সিং।ত্বকের অবাঞ্চিত ছোট ছোট লোমগুলো যা কিনা আমাদের ত্বকের সৌন্দর্যকে অনেকটাই বিবর্ণ করে দেয় এগুলোর জন্য ওয়াক্সিং অত্যন্ত জরুরি।

এছারাও ওয়াক্সিং ত্বকের জমে যাওয়া ময়লাও দূর করে নিয়ে আসে।কিন্তু ত্বকে যদি ব্রণ থাকে তাহলে এই ধরনের ত্বকের যত্নে ওয়াক্সিং করাতে গেলে কিছু সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে ।

কিন্তু কথা হলো যে,ত্বকে যখন ব্রণের সমস্যা থাকে তখন এই ব্যাপারটা কিছুটা কঠিন হয়ে যায়।দেখা যায় যে ওয়াক্সিং এর পরে ব্রণের সমস্যা বেড়ে যায় বা যাদের হয়তো ব্রণের সমস্যা ছিলোই না,তাদের ও হয়তো ব্রণ দেখা দেয়।

এই সমস্যাটি সমাধানের কিছু উপায় রয়েছে।ওয়াক্সিং করার পূর্বে এবং পরে এই নিয়মগুলো মেনে চলতে পারলে অনেকটাই উপকার পাওয়া যাবে।

চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক যে ব্রণ(একনি) প্রবণ ত্বকের যত্ন নিতে যেয়ে সেক্ষেত্রে ওয়াক্সিং করাতে গেলে কি কি বিষয়ের ওপর নজর রাখতে হবে।

১.ত্বক এক্সফোলিয়েট করতে হবে:

 

 

ওয়াক্সিং করার পূর্বে এক্সফোলিয়েটিং মাস্ক ব্যাবহার করতে হবে যেন মৃত চামড়া,কোষ এবং তেল ভালোভাবে পরিস্কার হয়।নাহলে এগুলো থাকা অবস্থায় ওয়াক্সিং করলে ব্রণের ভেতরে ময়লা,শূল ইত্যাদি আরো বেশি মাত্রায় আক্রমণ ঘটাবে।

একান্তই যদি এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব না পাওয়া যায় তবে পর্যাপ্ত পরিমান চিনি আর পানি মিক্স করে একটা মিশ্রণ বানিয়ে ত্বকে কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে নিতে পারেন।এটাও ভালো স্ক্রাবিং এর কাজ করবে।

আপনারা চাইলে অর্গানিকাওনের  একনি রিমুভিং প্যাক  টা  স্ক্রাবিং এর জন্য ব্যাবহার করতে পারেন।

নিম,পুদিনা,থানকুনি,সজনে,দারুচিনি,মসুর ডাল ,মঞ্জিস্ঠা, কস্তুরী হলুদ এর গুড়োসমুহের সাথে মুলতানি মাটি ও কাওলিন ক্লে এর দূর্দান্ত কম্বিনেশনে তৈরী এই একনি রিমুভিং প্যাক অন্যান্য উপকারীতার পাশাপাশি চমৎকারভাবে স্কিন এক্সফোলিয়েটিং করবে ।

.বেবি পাউডার ইউজ করুন:

কপালের ওপর ব্রণ হলে তখন ভ্রু প্লাক করা এবং কপালে ওয়াক্সিং করাটাও  কিছুটা কঠিন হয়ে যায়।ব্রণ যদি অত্যধিক মাত্রায় থাকে তখন ওয়াক্সিং করার ক্ষেত্রে ওয়াক্সিং শুরুর আগে কপালের ওপর কিছুটা বেবি পাউডার লাগিয়ে নিন।

এতে করে লোম উপড়ে নিয়ে আসাটা তুমনামুলক সহজ হবে আর ত্বকের এক্সট্রা অয়েলও এবজর্ব হবে।ব্রণ(একনি) যুক্ত ত্বকের যত্নে বেবি পাউডার একটা তুলনামুলক সেফ অপশন।

.টাচ করা থেকে বিরত থাকতে হবে:

 

ব্রণ(একনি) যুক্ত ত্বকে ওয়াক্সিং করার পরে ত্বকে হাত ছোঁয়ানো থেকে বিরত থাকুন।কারণ এই সময়ে ত্বক তুলনামুলক অনেক সেন্সিটিভ থাকে বিধায় হাতের স্পর্শে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বেশি হবার চান্স থাকে।

.ওয়াক্সিং কীট জীবাণুমুক্ত কিনা দেখে নিন:

ব্রণ(একনি) যুক্ত ত্বকের যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে পার্লারে ওয়াক্সিং করাতে গেলে সেখানকার ওয়াক্সিং এর জিনিসপত্র গুলো চেক করে নেয়া ভালো।

অনেক সময় অন্যদের ইউজ করা জিনিস থেকে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।অথবা অন্য কোন রোগ ও হয়ে যেতে পারে।

তাই নিজের সেফটির জন্য এই ব্যাপারটা নিজেকেই খেয়াল করতে হবে যে ওয়াক্সিং কীটগুলো ফ্রেশ ও জীবাণুমুক্ত করে নিয়েছে কিনা।

নিজেও যদি বাসায় ওয়াক্সিং করা হয়,তাহলেও স্টেরিলাইজড করে নিতে হবে।

.অয়েলি প্রডাক্ট ইউজ করা যাবে না:

অনেক পার্লারেই ওয়াক্সিং এর পরে ত্বক ময়েশ্চারাইজড করার জন্য এমন কিছু প্রডাক্ট ইউজ করে যেটাতে অয়েল থাকে।

সেক্ষেত্রে ব্রণ(একনি) যুক্ত ত্বকের যত্নের জন্য অয়েল ফ্রি প্রডাক্ট নেয়ার জন্য বলতে হবে।

সেক্ষেত্রে ব্রণ যুক্ত ত্বকের জন্য হাইড্রোকর্টিসন,এলো যুক্ত প্রডাক্ট এপ্লাই করার কথা সাজেস্ট করা যেতে পারে।

বাসায় করলে আর্গান অয়েল টা ইউজ করা যায়।

এটা সম্পূর্ণ নন কমেডোজেনিক বিধায় ব্রণ যুক্ত ত্বকের জন্য একদম ফার্স্ট চয়েজ লিস্টে রাখা যায়।

আপনারা চাইলে অর্গানিকাওনের আর্গান অয়েলটি নিতে পারেন।

সম্পূর্ণ অপরিশোধিত ও কোল্ড প্রেসড প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রস্তুতিকৃত এই অয়েলটি ব্রণ যুক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে চমৎকার  একটা নন কমেডোজেনিক অয়েল যা ওয়াক্সিং এর পরে ময়েশ্চারা

.ওয়াক্সিং এর পূর্বে ওয়ার্কআউট সেড়ে নিন:

ব্রণ(একনি) যুক্ত ত্বকের যত্ন নিতে যেয়ে তো শরীরকে অবহেলা করা যাবেনা।তাই যেদিন ওয়াক্সিং করানোর কথা ভাবছেন সেদিনের ওয়ার্কআাউট হয় ওয়াক্সিং করানোর মিনিমাম ৫/৬ ঘন্টা আগে রাখুন বা ওয়াক্সিং এর পরে করুন।

কারণ সাধারনত ওয়ার্কআউট এর সময় অতিরিক্ত ঘাম হয়।এই অবস্থাতেই যদি ওয়াক্সিং করানো হয় তবে সেটা ব্রণ(একনি) বাড়িয়ে তুলতে পারে।সেজন্য এই টাইমিংটার ব্যাপারেও আমাদেরকে নজর দিতে হবে।

৬. অতিরিক্ত ওয়াক্সিং করানো যাবেনা:

ব্রণ(একনি) যুক্ত ত্বক তো এমনিতেই অতিরিক্ত সেন্সিটিভ।তাই এই ধরনের ত্বকের যত্ন নিতে যেয়ে অনেকগুলো সুক্ষ ব্যাপারের প্রতি খেয়াল রাখতে হয়।

ব্রণ যুক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে প্রতি ওয়াক্সিং এর মধ্যে অন্ততপক্ষে চার থেকে ছয় সপ্তাহের ব্যবধান থাকাটা ভালো।

. এসট্রিনজেন্ট ব্যাবহার করুন:

ওয়াক্সিং করানোর পরে ত্বক কিছুটা জ্বালাপোড়া করে বা অনেক সময় অনেকের ক্ষেত্রে হালকা একটু ফুলেও যেতে পারে।ব্রণ(একনি) যুক্ত ত্বক হলেতো এটা আরো একটু বেশি হতে পারে।

তাই ওয়াক্সিং করার পর পরই এসট্রিনজেন্ট ইউজ করুন।একটা কটন বল এসট্রিনজেন্টে চুবিয়ে নিয়ে ওয়াক্সিং করা ফেসের ওপর আস্তে আস্তে চেপে ধরলে অনেকটা শান্তভাব চলে আসবে এবং ত্বকের জ্বালাপোড়া কমিয়ে ঠান্ডা অনুভুতি দেবে।

এভাবে ব্রণ(একনি) যুক্ত ত্বকের যত্নেও ওয়াক্সিং করা যাবে কোন চিন্তা ছাড়াই।

 

সতর্কতা:

এই লিখাগুলো শুধুমাত্র জানানোর জন্য,সতর্ক করা এবং এওয়ারনেস বাড়ানোর স্বার্থে লিখা হয়েছে।এটা কোন রোগ নির্ণয়  বা প্রেসক্রিপশন বুঝায় না।

যেহেতু প্রত্যেকের ত্বক আলাদা এবং সমস্যাও আলাদা তাই এখান থেকে কোন তথ্যের ওপর সক্রিয়তা ঘটাতে চাইলে নিজস্ব চিকিৎসক বা কনসালটেন্ট পরামর্শ নিয়ে নিন।

এখানের ইনফর্মেশন কাজে লাগাতে চাইলে সম্পূর্ণই নিজের দায়িত্বে নিতে হবে।

অর্গানিকাওন এর কোন দায়ভার বহন করবে না।

সবাই ভালো থাকবেন সুস্খতার সাথে,এই কামনায় এখানেই শেষ করছি ।