কাজলকালো ঐ দুটি চোখ, ও চোখে জাদু আছে…কালজয়ী এই গানটি শোনেননি এমন মানুষ বোধ হয় খুব কমই রয়েছে। কিন্তু মজার বিষয় হলো যতই আমরা কাজল কালো চোখ ভালোবাসি না কেন? যখন এই কালো দাগ চোখের নিচে দেখা দেয় তখন সেটা আমাদের কারোরই ভালো লাগে না। কথায় বলে চোখ নাকি মনের কথা বলে। কিন্তু চোখের নিচের কালো দাগ কিন্তু অন্য কথা বলে। এটা আমাদেরকে জানান দেয় যে খাদ্যাভাস,বয়স বা জীবনযাত্রায় হচ্ছে অনিয়ম। একটু থামতে হবে,যত্ন নিতে হবে চোখের। চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায় কি? তা জানতে লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
চোখের চারপাশে খেয়াল করছি তো আমরা ?
সময়ের সাথে সাথে আমাদের ত্বক হারায় তার দৃঢ়তা ও জেল্লা। আমাদের প্রতিদিনকার জীবনাচরণ,কম ঘুমানো,স্ট্রেস,ব্যাস্ততা,পরিবেশদূষণ,সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্নি,বংশগত কারণ ইত্যাদি কারণগুলো চোখের নিচের কালো দাগ হওয়ার জন্য দায়ী।
এজিং সাইনগুলো সাধারনত সবচেয়ে প্রথমে চোখের নিচেই দৃশ্যমান হয়। কারন আমাদের চোখের নিচে প্রিঅরবিটাল হলো নামক অংশের চামড়াতে থাকা রক্তের শিরাগুলো তুলনামুলক পাতলা হয়।
ডাগর ডাগর দুটো চোখের সৌন্দর্য বহুলাংশে নস্ট হয়ে যায় যখন চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায়। আর এতে করে বয়স্ক দেখায় অনেকটাই।
তো চলুন তাহলে প্রথমেই জেনে নেই যে চোখের নিচের কালো দাগ কেন হয় ।
বয়স:
চোখের নিচের কালো দাগ এবং ফাইন লাইন্স হওয়ার অন্যতম একটা কারণ হলো বয়স। সময়ের সাথে সাথে বয়স বাড়ে এবং ত্বকের চামড়া পাতলা হতে থাকে। আর এতে করে চামড়ার নিচে থাকা রক্তনালীগুলো ক্লিয়ার হয়ে ওঠে। এ তে করে চোখের চারপাশ কালো দেখায়।
সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্নি:
ক্ষতিকারক আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নি আমাদের ত্বকে থাকা কোলাজেন কমিয়ে ফেলে। কোলাজেন আমাদের ত্বকের স্কিন টিস্যুতে থাকা মেইন প্রটিন যা আমাদের ত্বক টানটান রাখে। সূর্যের ক্ষতিকারক আলোতে নিজেকে অসুরক্ষিত রাখা এবং অনেক বেশি সময় ধরে থাকলে এতে করেও চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায়।
পানিশূণ্যতা বা ডিহাইড্রেশন:
শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাব হলে চোখের চারপাশের ত্বক কালচে এবং মলিন হয়ে ওঠে।
চোখের ওপর বেশি প্রেশার পড়া:
অনেক বেশি সময় ধরে কম্পিউটার ও ফোনে বেশি সময় ধরে কাজ করলে মানে স্ক্রিন টাইমিং অনেক বেশি হলে তখন চোখের চারপাশের রক্তনালীগুলো বড় দেখায় এবং এতে করে চোখের নিচে কালো দেখায়।
ধুমপান করা:
অতিরিক্ত ধুমপান করলে রক্ত পরিচলনে সমস্যা হয়ে থাকে,ত্বকে ভিটামিন এ শোষণ কমে যায়। তাছারাও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরী হয় এবং কোলাজেন আর ইলাস্টিন তৈরী হওয়া কমিয়ে দেয়। এতে করে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায়।
ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন্স:
নানারকম ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন্স, হাসি,কান্না, ভুরুর ওঠানামা এগুলো যদি অতিরিক্ত পরিমাণে হয় তাহলেও কিন্তু ত্বকে ফাইন লাইন্স হয়ে থাকে। এছারা ঘুমের ধরণও এক্ষেত্রে দায়ী। বালিশে গাল ছুইয়ে ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে এর কারনে পেশী কুচঁকে ত্বকে ভাঁজ পড়ে। অনেকেই বালিশে মুখ ডুবিয়ে ঘুমান। এতে করে চোখের নিচের ত্বক ভাঁজ পড়ে এবং কালচে হয়ে যায়।
পরিবেশগত কারণ:
নানাবিধ প্রাকৃতিক সমস্যা যেমন শুস্ক আবহাওয়া,বাতাস এবং অতিরিক্ত পরিমাণে পরিবেশ দূষণও দায়ী চোখের নিচের ফাইন লাইন্স ও কালো দাগ দূর করার জন্য।
অনেক বেশি পরিমানে মেকাপ করা:
নানা কারনেই মেকাপ তো করতেই হয়,ব্যবহার করতে হয় নানা ধরনের প্রডাক্টস। কিন্তু ব্যবহারের পর যদি মেকাপ ঠিকঠাক মত রিমুভ না করা হয় তাহলে সেগুলো ত্বকে নানারকম ক্ষতি করে।
ত্বকের লোমকূপ আটকে ফেলে এবং এতে করে ব্রণ হওয়া সহ ত্বকে ফাইন লাইন্সের প্রকোপ দেখা দেয়। আর চোখের নিচের ত্বক সংবেদনশীল হওয়ায় আস্তে আস্তে কালচে হয়ে যায়।
ত্বকের লোমকূপ আটকে ফেলে এবং এতে করে ব্রণ হওয়া সহ ত্বকে ফাইন লাইন্সের প্রকোপ দেখা দেয়। আর চোখের নিচের ত্বক সংবেদনশীল হওয়ায় আস্তে আস্তে কালচে হয়ে যায়।
এখন, চোখের নিচের ফাইন লাইন্স ও কালচে দাগ হওয়ার সমস্যা তো জানলাম অনেকগুলো। চলুন তাহলে জেনে নেই চমৎকার কিছু সমাধান।
চোখের নিচের কালো দাগ ও ফাইন লাইন্স দূর করার উপায়:
নানাবিধ ঘরোয়া টোটকা,স্বাস্থ্যকর ও নিয়মিত স্বাস্থ্যকর জীবনাচরণ এবং অর্গানিক স্কিন কেয়ার প্রডাক্টস ব্যাবহারের মাধ্যমে এই চোখের নিচের কালো দাগ দূর করা সম্ভব।
চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার জন্য আমাদেরকে যা যা মেনে চলা উচিত:
১.ফেসিয়াল এক্সারসাইজ করতে হবে।
২.কোন ধরনের এলার্জি থাকলে সেগুলো বুঝতে পারা এবং সেই অনযায়ী ট্রিটমেন্ট নেয়া।
৩.সুষম ডায়েট গ্রহন করা।
৪.সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্নি থেকে সুরক্ষিত থাকার ট্রাই করা।
৫.পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমানো।
৬. সিল্ক কাপড়ের বালিশের কভার ব্যাবহার করতে পারলে ভালো।
চোখের নিচের ফাইন লাইন্স ও কালো দাগ দূর করার জন্য প্রতিকার
ওপরে আমরা জেনেছি যে আমাদেরকে কি কি নিয়মগুলো মেনে চলা উচিত। এখন আমরা জানবো যে কি কি জিনিস ব্যাবহার করতে হবে এজন্য।
সানস্ক্রিন:
প্রথমেই যেটা সবচেয়ে জরুরি তা হলো সানস্ক্রিন ব্যাবহার করা। সূর্যের আলো থেকে যত বেশি সম্ভব নিজেকে সুরক্ষিত রাখার ট্রাই করতে হবে। বাইরে বের হবার আনুমানিক ২০ মিনিট আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যাবহার করতে হবে। ন্যূনতম এসপিএফ ৩০ আছে এরকম সানপ্রটেকশন যুক্ত স্কিন কেয়ার প্রডাক্ট ব্যাবহার করতে হবে।
বয়স অনুযায়ী সানস্ক্রিনের এসফিএফের মাত্রা ১৫ থেকে ৫০ পর্যন্তও হতে পারে। তাছারাও ত্বকে সরাসরি সূর্যের আলো পড়া রোধ করার জন্য সানগ্লাস,ক্যাপ,ছাতা,লং স্লিভ ড্রেস পড়ার ট্রাই করতে হবে। আর সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পরে বাসায় ফিরে অবশ্যই ডাবল ক্লিংজিং করতে হবে।
আইক্রিম:
চোখের নিচের ত্বক অনেক বেশি পরিমাণে সংবেদনশীল বিধায় এই ত্বক আক্রান্ত হয় তাড়াতাড়ি। তাই শরীরের অন্য অংশের তুলনায় এটার যত্নও নিতে হয় বেশি। বাজারে বিভিন্ন ধরনের আইক্রিম রয়েছে। ত্বকের ধরণ ও বয়স এর তারতম্য অনুযায়ী আইক্রিম সিলেক্ট করতে হবে নিজের জন্য।
ময়েশ্চারাইজার:
ত্বক যদি শুস্ক বা ড্রাই ধরণের হয় তাহলে খুব সহজেই চোখের নিচে কালো দাগ আর ফাইন লাইন্স হয় এবং আরো বেড়ে যায়। সেজন্য ভালো একটা ময়েশ্চারাইজার ইউজ করা অত্যন্ত জরুরি।
সুষম খাদ্যাভাস:
ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য সঠিক একটা খাদ্যাভাস মেইনটেইন করতে পারা খুবই জরুরি। আমাদের ত্বকের জন্য ভিটামিন কে,ভিটামিন ই,ভিটামিন এ,ভিটামিন বি৫, ভিটামিন সি খুবই প্রয়োজনীয়। এগুলো আমাদের ত্বকের বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। বিভিন্ন ধরনের শাকসব্জি ও ফলমূল থেকে আমরা এই ভিটামিনগুলো পাই বিধায় খাদ্যতালিকায় এগুলো অবশ্যই রাখার চেস্টা করতে হবে।
চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার জন্য কিছু প্রাকৃতিক রেমিডি
উপরে তো আমরা অনেকগুলো রেমিডি জেনেছি চোখের নিচের কালো দাগ ও ভাঁজ দূর করার। এবার চলুন জেনে নিবো কিছু ঘরোয়া রেমিডি যা ধীরে ধীরে এগুলো কার্যকরীভাবে দূর করে আনবে। ছেলে ও মেয়েদের চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার উপায়ঃ
ঠান্ডা পানির চাপ প্রয়োগ:
সবচেয়ে ইজি একটা প্রসেস হলো চোখে ঠান্ডা পানির চাপ প্রয়োগ করা। চোখের চারপাশের রক্তনালী বিভিন্ন কারণে বিস্তৃত হয়ে যেয়ে চোখের চারপাশ কালচে দেখায় এবং ভাঁজ পড়ে যায়।এজন্য একটা বরফ টুকরো সরাসরি বা পাতলা কাপড়ে মুড়ে নিয়ে চোখের ওপর আলতো ভাবে চেপে চেপে ধরতে হবে।
সহনীয় সময় পর্যন্ত চেপে চেপে ধরে রাখতে হবে। এতে করে চোখ অনেকটা রিল্যাক্স তো হয়ই আবার কালচে দাগও আস্তে আস্তে উঠে আসতে সহায়তা করে। আরো সহজভাবে ব্যাবহারের জন্য আইস কিউব বক্স ইউজ করা যায়।
টি ব্যাগ:
ফুটন্ত গরম পানিতে টি ব্যাগ কিছুটা সময় ফুটিয়ে নিয়ে সেটাকে ঠান্ডা করে নিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ফ্রিজে রেখে দিন। তারপর সেটা চোখের ওপরে রেখে ৫/৭ মিনিট অপেক্ষা করার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। নিয়মিতভাবে ব্যাবহার করলে ধীরে ধীরে কালচেভাব দূর হবে।
টমেটো:
প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় টমেটো চোখের চারপাশের রং এর যে ভারসাম্যহীনতা হয় তা দূর করতে সহায়তা করে। সেজন্য এক চা চামচ পরিমাণ টমেটোর রসের সাথে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চোখের চারপাশে মেখে নিয়ে কিছুক্ষন রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছারাও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও টমেটোর রস অনেক ভালো কাজ করে।
লেবুর রস ও কাঠ বাদামের তেলের মিশ্রণ:
আনুমানিক এক চা চামচ পরিমান কাঠ বাদামের তেলের সাথে কয়েক ফোঁটা লেবর রস মিশ্রিত করে নিয়ে চোখের চারপাশে মেখে কিছুক্ষন রেখে দিতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
অ্যালোভেরা:
চমৎকার এই ন্যাচারাল উপাদানটি চোখের নিচের ফাইন লাইন্স ও কালচে কালো দাগ দূর করতে অনেক ভালো কাজ করে। এলোভেরা মিক্স নিয়ে চোখের চারপাশের অংশে মেখে ৫/৬ মিনিট রেখে এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ডিমের সাদা অংশ:
ডিম ভেঙ্গে নিয়ে সাদা অংশটুকু ত্বকের চারপাশে লাগিয়ে নিয়ে কিছুক্ষন রেখে দিন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তবে যদি ত্বকে এলার্জি থেকে থাকে তাহলে এটা ব্যাবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
নারকেল তেল ও হলুদ গুড়োর মিশ্রণ:
একটি ছোট বাটিতে এক চা চামচ পরিমাণ নারিকেলে তেলের সাথে এক চিমটি পরিমান হলুদ নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করে নিতে হবে। এটা চোখের ত্বকের চারপাশে মেখে নিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এখানে নারিকেল তেল না থাকলে বাদাম তেল হলেও ভালো কাজ করবে।
টক দই:
অল্প একটু টক দই এর সাথে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিয়ে পেস্ট তৈরী করে চোখের চারপাশের অংশে লাগিয়ে নিয়ে ১০/১৫ মিনিট মতো রেখে নিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
পাকা কলার পেস্ট:
প্রচুর পরিমাণ প্রাকৃতিক তেল আর ভিটামিন সমৃদ্ধ হওয়ায় কলা অত্যন্ত উপকারী একটা উপাদান ত্বকের জন্য।কলার অল্প একটু পরিমাণ নিয়ে পেস্ট করে নিয়ে সেটা চোখের চারপাশে লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ ওয়েট করতে হবে।আনুমানিক ২০-২৫ মিনিট রেখে এরপর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুতে হবে।
চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার ঔষধ না খেয়ে এই প্রাকৃতিক চিকিৎসাগুলো নিতে পারেন।
এভাবে ঘরোয়া নানা উপাদান চোখের নিচের ভাঁজ ও কালিমা দূর করে নিয়ে আসতে সাহায্য করবে।
চোখ আমাদের অন্যতম জরুরি অঙ্গ তো বটেই এবং আমাদের সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশও ঘটায়। চোখের নিচের ভাঁজ ও কালচে দাগ চোখের সৌন্দর্য অনেকটাই নস্ট করে দেয় এবং একটা ক্লান্ত ভাব দেখায়। তাই নিজের চোখের যত্ন নিতে অবশ্যই চোখের নিচের ফাইন লাইন্স ও কালচে দাগ দূর করার প্রতি সচেস্ট থাকতে হবে।সুস্থ সুন্দর যে চোখজোড়া দিয়ে আপনি সবকিছু দেখবেন সেই চোখজোড়া তো ভালো রাখতেই হবে। বয়সের ছাপ দূর করার উপায় জানতে ব্লগটি পড়তে পারেন।
এরকম আরো অনেক কিছু জানতে চাইলে আমাদের অর্গানিকাওন পেজের ব্লগগুলো পড়তে পারেন। ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা নিয়ে এখানে নিয়মিত লেখা হয়ে থাকে। আপনারা চাইলে নিজেদের প্রয়োজনীয় টপিক খুজে নিতে পারেন।
আজ এ পর্যন্তই।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থতার সাথে।
ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর ভাবে বিষয়টি তুলে ধরার জন্য।
আরো শিখুন……।
bdknowledge.com