কিছুদিন ধরেই খেয়াল করলাম আমার ডাবল চিন বোঝা যাচ্ছে। এটি দেখে তো আমি বেশ চিন্তিত হয়ে সমাধান খুঁজতে শুরু করলাম। জানলাম ফেইস ম্যাসাজ করে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব এবং শার্প জ লাইনও পাওয়া সম্ভব। কিন্তু সবসময় পার্লারে যেয়ে ফেসিয়াল ম্যাসাজ করা তো সম্ভব না আর এর জন্য একটি ভালো ফেসিয়াল অয়েলেরও প্রয়োজন। তখন সন্ধান পেলাম অর্গানিকাওনের কুমকুমাদি অয়েলের। গত ছয় মাস ধরে ব্যবহার করছি অয়েলটি এবং বাসায় বসেই ফেসিয়াল ম্যাসাজ করছি। দারুণ কিছু চেঞ্জ লক্ষ্য করেছি। আজকে আমার কুমকুমাদি অয়েল ব্যবহার করার অভিজ্ঞতাটাই জানাবো আপনাদের। আশা করছি আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাহায্য করবে এবং অনেক প্রশ্নের উত্তর জেনে যাবেন।
কুমকুমাদি অয়েল কী?
অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করার আগে চলুন জেনে নেই কুমকুমাদি অয়েল কী। সংস্কৃত ভাষায় ‘কুমকুমা’ অর্থ স্যাফরন বা জাফরান। কুমকুমাদি অয়েল অর্থ হলো জাফরানের তেল। এটি কুমকুমাদি তৈলাম নামে ভারতবর্ষে সর্বত্র পরিচিত। প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে সৌন্দর্যচর্চার জন্য এই কুমকুমাদি অয়েলটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। স্যাফরন ছাড়াও নানারকম ফল, ফুল এবং ভেষজ উপাদান ও নির্যাস থেকে এই তেলটি তৈরী করা হয়। শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধি নয় বরং ত্বকের নানারকম উপকার করে এই কুমকুমাদি অয়েল।
কী কী উপাদানে তৈরী এই তেলটি?
আগেই বলেছি এই অয়েলের প্রধান উপাদান হলো স্যাফরন বা জাফরান। এছাড়াও এতে আছে-
- চন্দন
- লাল চন্দন
- গোলাপের নির্যাস
- হলুদ
- পেঁপের নির্যাস
- সিসেমী অয়েল
- গোখুরা
- নারিকেল তেল
সহ প্রায় ৫০টিরও বেশি উপকারী ফুল, ফল ও ভেষজ উপাদান আছে, যা ফেইসের ভেতর থেকে গ্লো আনে, করে তোলে হেলদি।
কুমকুমাদি অয়েল ত্বকের কী কী উপকার করে?
১) ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়ঃ কুমকুমাদি অয়েলের প্রধান উপাদান হলো স্যাফরন। প্রাচীনকাল থেকেই ত্বক উজ্জ্বল করতে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এমনকি ত্বকের কালো দাগ, হাইপারপিগমেন্টেশন, রোদে পোড়া দাগ এসব দূর করার পাশাপাশি স্কিনটোনকে লাইট করে থাকে স্যাফরন। এর সাথে অন্যান্য আয়ুর্বেদিক উপাদান যেমন- চন্দন, মঞ্জিষ্ঠা ইত্যাদি যুক্ত হলে তা ত্বকের গ্লো বাড়াতে গভীরভাবে কাজ করে। ফলে ফেইসে রেডিয়েন্স ও গ্লো আসে। সবকিছু ন্যাচারাল ইনগ্রেডিয়েন্স হওয়ায় স্কিন থাকে হেলদি।
২) অ্যান্টি এজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করেঃ কুমকুমাদি অয়েলে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা মূলত অ্যান্টি এজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এগুলো অকাল বার্ধক্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এই অয়েলের মাঝে রয়েছে লিকোরিস, যা ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। ফলে রিংকেলস ও ফাইন লাইনস দূর হয়। এছাড়া রেডিকেলস এর কারণে ত্বকের যে ক্ষতি হয় তা প্রতিরোধ করে থাকে এই অয়েলটি। এই অয়েলের মাঝে থাকা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান স্কিনের সেল রিজেনারেট করতে সাহায্য করে, বয়সের দাগ কমায়।
৩) স্কিনের ক্ষত সারিয়ে ইমপারফেকশন দূর করেঃ কুমকুমাদি অয়েলের আরেকটি দারুণ কার্যকারীতা হলো ত্বকের ক্ষতগুলো সারিয়ে তুলে ত্বককে আবার হেলদি করে তোলা। পিগমেন্টেশন, ব্রণ, সানট্যান, ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ ইত্যাদির কারণে অজান্তেই ত্বকের নানারকম ক্ষতি হয়ে থাকে। যেহেতু স্কিন সাধারণত অনেক সেনসিটিভ হয়ে থাকে তাই চাইলেই যে কোনো কিছু ইউজ করা যায় না। এক্ষেত্রে কুমকুমাদি অয়েল একটি দারুণ জিনিস। এর মাঝে থাকা চন্দনের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান এসবের বিরুদ্ধে লড়াই করে, ব্রণ, স্কিনের ইনফ্ল্যামেশন দূর করে। মঞ্জিষ্ঠা দাগ, ছোটখাটো কাটাছেঁড়া সারিয়ে তোলে। এছাড়া অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদানের নির্যাস স্কিনের ভেতরে পুষ্টি যোগায় এবং স্কিনের নতুন সেল তৈরী করতে সাহায্য করে। ফলে ফেইস হয় ন্যাচারালি গ্লোয়িং ও হেলদি।
৪) স্কিন ময়েশ্চারাইজড ও নারিশ করেঃ এই অয়েল ত্বকের পোরস ক্লগ না করেই পুষ্টি যোগায় এবং অনেক সময় পর্যন্ত হাইড্রেট রাখে। অয়েলের মাঝে থাকা আমন্ড ও সিসেমি অয়েল ন্যাচারাল ইমোলিয়েন্ট হিসেবে কাজ করে তাই আপনার ত্বক সারাদিন থাকে ময়েশ্চারাইজড ও সফট। এছাড়া এই তেলগুলো ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করে অন্যান্য আয়ুর্বেদিক উপাদানকে স্কিনের গভীরে ঢুকতে সাহায্য করে, ফলে স্কিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যায়। তাই স্কিনের আর্দ্রতার ভারসাম্য থাকে, ইলাস্টিসিটি ঠিক রাখে এবং স্কিনকে ডিহাইড্রেট হওয়া থেকে বাঁচায়।
৫) যেকোনো স্কিন টাইপে স্যুট করেঃ কুমকুমাদি অয়েলের সবচেয়ে বড় একটি সুবিধা হলো এটি সব স্কিন টাইপেই স্যুট করে। অয়েলি, কম্বিনেশন, নরমাল বা ড্রাই- অয়েলটি সব ফেইসেই দারুণ কাজ করে। এটি ত্বকের অয়েল প্রোডিউস ব্যালান্স করে তাই একনে প্রন স্কিনে কোনো সমস্যা হয় না। আবার অয়েলটি স্কিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যুগিয়ে ড্রাই ও সেনসিটিভ স্কিনের ড্রাইনেস ও ইরিটেশন দূর করে। এটি সাধারণত নন কমেডোজেনিক হিসেবে তৈরী করা হয়, ফলে এটি পোরস ক্লগ করে না এবং একনে হয় না বলে ত্বক থাকে স্পট ফ্রি ও সেইফ।
৬) ব্রণ থেকে রক্ষা করেঃ কুমকুমাদি অয়েলে আছে চন্দনসহ নানারকম অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, যা স্কিনে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ রোধ করে, ফলে ব্রেক আউট হয় না। এছাড়া ব্রণের দাগও দূর করে এই অয়েলটি। এর মাঝে থাকা নন ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ বার বার ব্রণের ফিরে আসা রোধ করে। এই কারণে এই ফেইস অয়েলটি ব্রণ থেকে ত্বক সুরক্ষিত রাখে।
৭) পোরস টাইট করেঃ স্কিনের পোরস বেশি বড় হয়ে গেলে এখান থেকে নানা সমস্যা তৈরী হয়। কুমকুমাদি অয়েল এই পোরস গুলোকে টাইট করে স্কিনকে রাখে হেলদি। ফাইন লাইনস ও রিংকেলসের প্রবলেম অনেকটাই কমে আসে।
ফেসিয়াল ম্যাসাজের উপকারিতা
সাধারণত আমরা বডি ম্যাসাজ করে থাকি, তবে ফেসিয়াল ম্যাসাজ নিয়ে খুব একটা সচেতন নই। স্কিনকেয়ারের পাশাপাশি ফেসিয়াল ম্যাসাজও কিন্তু আমাদের স্কিনে দারুণ সব বেনিফিটস দেয়। চলুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
১। জ লাইন শার্প করেঃ বিভিন্ন মডেল বা বিশ্বসুন্দরীদের শার্প জ লাইন দেখে কি মাঝে মাঝে মনে হয় যে এরকম যদি আমাদেরও হতো? তবে নিয়মিত শুরু করুন ফেইস ম্যাসাজ। দেখা গেছে কিছু ফেইস ম্যাসাজ টেকনিক নিয়মিত করলে হেলদি স্কিনের পাশাপাশি জ লাইন শার্প হয়ে থাকে। প্রফেশনাল বিউটিশিয়ান ও মডেলরা তাই নিয়মিত ফেইস ম্যাসাজের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
২। স্ট্রেস রিলিফ করেঃ ফেসিয়াল ম্যাসাজে যে জেন্টেল প্রেসার ও রিদমিক ম্যাসাজ করা হয় তা মাসলগুলোকে রিল্যাক্স করে এবং টেনশন দূর করে। ফলে পুরো বডিতেই একটি রিলাক্সেসন আসে, স্ট্রেস রিলিফ হয়। এতে রিংকেলস, ফাইন লাইনস কমে যায় ফলে চেহারায় আসে তারুণ্য।
৩। লিম্ফ্যাটিক ড্রেইনেজ ক্লিয়ার করেঃ আমাদের শরীরে যত টক্সিক রেসিডিউ আছে তা শরীর থেকে বের করতে লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম কাজ করে থাকে। ফেসিয়াল ম্যাসাজের স্পেশাল টেকনিকে রিপিটেটিভ মুভমেন্ট ও জেন্টেল প্রেসার লিম্ফেটিক মুভমেন্টকে স্টিমুলেট করে সহজ করে দেয়। ফলে লিম্ফ্যাটিক ড্রেইনেজ দ্রুত ক্লিয়ার হয় এবং মুখে ফোলা ভাব, ইনফ্ল্যামেশন হয় না। তাছাড়া রেসিডিউ ক্লিয়ার হওয়ার কারণে স্কিনের টক্সিক পার্টিকেলসও বের হয়ে যায়, তাই বিভিন্ন রকম ইনফেকশন, র্যাশ, ইচিং ইত্যাদি থেকে রক্ষা পায়।
৪। ফাইন লাইনস ও রিংকেলস দূর করেঃ ফেসিয়াল ম্যাসাজ স্কিনে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়িয়ে দিয়ে স্কিনে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ করে। এটি কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় বলে ফাইন লাইনস ও রিংকেলস দূর হয়, নতুন সেলস গঠন হতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত ফেসিয়াল ম্যাসাজ অ্যান্টি এজিং হিসেবে কাজ করে।
৫। সাইনাসের সমস্যা দূর করেঃ ফেসিয়াল ম্যাসাজ যে শুধু সৌন্দর্যের জন্য কাজ করে তা-ই নয় বরং বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর বেনিফিটসও দেয়। যেমন- ফেসিয়াল ম্যাসাজের হালকা প্রেসার ও মুভমেন্ট নাকের আশেপাশের নার্ভকে স্টিমুলেট করে থাকে। ফলে সাইনাসের জন্য যে অস্বস্তি হয়ে থাকে সেটি উপশম হয় এবং ভেতরে জমে থাকা ময়লা বের হয়ে আসতে সাহায্য করে। স্ট্রং সাইনাসের সমস্যা ট্রিট্মেন্ট না করলেও সিজনাল ও মাইল্ড সাইনাস প্রবলেম ফেসিয়াল ম্যাসাজ দূর করে থাকে।
৬। মুখের ফোলা ভাব ও ডাবল চিন কমায়ঃ অনেক সময় স্কিনে অতিরিক্ত মেদ জমে, ঠিকমতো রেসিডিউ ক্লিয়ার না হলে, রক্ত চলাচল ঠিক মতো না হলে গাল ফুলে যায় বা মোটা হয়ে যায়, হয় ডাবল চিন। নিয়মিত ফেসিয়াল ম্যাসাজ করলে এ সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায়। এটি মেদ ভাঙতে এবং মাসল টাইট করতে সাহায্য করে ফলে মেদ ও অন্যান্য জিনিস স্কিনে জমতে পারে না। তাই ডাবল চিন ও ফোলা ভাব থেকে মুক্তি মেলে।
৭। ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ায়ঃ ফেসিয়াল ম্যাসাজের সময় বিভিন্ন ধরনের যে স্ট্রোক ব্যবহার করা হয়, তা স্কিনের সেলগুলোকে স্টিমুলেট করে, ফলে ত্বকের কোষগুলোতে অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টির সরবরাহ বাড়ে। এই সার্কুলেশন বেড়ে যাওয়ার ফলে মুখের ফোলাভাব দূর হয়। বিশেষ করে চোখের নিচের ফোলাভাব চলে যায়, স্কিনটোন ঠিক হয়, কালো দাগ, ফাইন লাইনস, রিংকেলস এসবও কমে আসে। ফেইস ম্যাসাজ স্কিন থেকে টক্সিন বের করতে হেল্প করে বলে স্কিন হয়ে ওঠে আরো সতেজ ও তারুণ্যোদীপ্ত।
৮। স্কিনটোন উজ্জ্বল করে ও ক্ষত সারায়ঃ নিয়মিত ম্যাসাজে ফেইসের ব্লাড ফ্লো, অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্কিনটোন উজ্জ্বল করে থাকে। এছাড়া ছোটখাটো দাগছোপ, কাটা বা ক্ষতও আস্তে আস্তে সেরে যেতে থাকে নিয়মিত ফেসিয়াল ম্যাসাজে।
কীভাবে ব্যবহার করেছি?
আমার স্কিন টাইপ অয়েলি তাই আমি ফেইস অয়েল ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটু কনফিউজড ছিলাম। তবে অর্গানিকাওন এ কথা বলে আমি অয়েলটি নিলাম, এবং তাদের সাজেশন অনুযায়ী আমি রাতে ফেইস ডাবল ক্লেনজিং করার পর ২ থেকে তিন ফোঁটা নিয়ে ফেইসে ২/৩ মিনিট ম্যাসাজ করেছি। যাদের স্কিন নরমাল বা ড্রাই তারা সকালে ও রাতে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন এভাবে।
আমার এক্সপেরিয়েন্স কেমন?
কুমকুমাদি অয়েলটি ব্যবহার করার পর আমার এক্সপেরিয়েন্স খুবই পজেটিভ। ফেইস অয়েলের ব্যাপারে আমার ধারণাই বদলে দিয়েছে এই অয়েলটি। ব্যবহারের কিছুদিন পর থেকেই আমি আমার ত্বকে বেশ পরিবর্তন দেখতে পাই। আমার এটি যেসব কারণে ভালো লেগেছে-
- অয়েলটি খুবই লাইট যার কারণে ফেইসে দিলে গ্রিজি ফিল হয় না।
- কেমিক্যাল ফ্রি হওয়ায় স্কিনে কোনো ইরিটেশন বা র্যাশ হয়নি।
- অয়েলি স্কিন হওয়া স্বত্ত্বেও এটি আমার স্কিনে স্যুট করেছে।
- ক্লেনজিং করার পর স্কিনে যে ড্রাই ফিল হতো সেটি দূর হয়ে যায় এবং প্রায় সারাদিনই এটি আমাকে ময়েশ্চারাইজড ফিল দেয়।
- আমার ডাবল চিন দূর হয়েছে আর জ লাইন অনেকটা শার্প হয়েছে আগের থেকে।
- আমার মুখের পিগমেন্টেশন, সানট্যান, ডার্ক সার্কেলস ইত্যাদি দূর হয়েছে এবং স্কিনটোন ইভেন হয়েছে।
- স্কিনে একটা ন্যাচারাল গ্লো এসেছে। স্কিন আগের চেয়ে অনেক বেশি হেলদি ও ইয়াংগার লুকিং হয়েছে।
- আমার ফেইসে যে সানবার্ন সহ অল্প কিছু ক্ষত ছিলো তা একদমই সেরে উঠেছে।
একটু ধৈর্য্য ধরে সঠিক নিয়ম মেনে ব্যবহার করতে পারলে কুমকুমাদি অয়েল আসলেই স্কিনের অনেক উপকার করে। এটি শুধু ফেইস অয়েল হিসেবে না, মেকআপ রিমুভিং অয়েল হিসেবেও দারুণ কাজ করে। আপনি চাইলে বডিতেও এটি ম্যাসাজ করতে পারবেন। যেহেতু এতে কোনো আলাদা কেমিক্যাল নেই, সবই অর্গানিক উপাদান এজন্য স্কিনে প্রবলেম হওয়ার চান্স কমে যায়।
সতর্কতা
আগেই বলেছি এই অয়েলটিতে যে উপাদানগুলো ব্যবহার করা হয়েছে সবই ন্যাচারাল। আমরা কিন্তু জানি যে, আমাদের সবার স্কিনটাইপ সেইম নয়। তাই সবার স্কিনে সব প্রোডাক্ট সেইমভাবে স্যুট করবে এটাও নিশ্চিত করে বলা যায় না। ফেসিয়াল অয়েলটি নেয়ার পর শুরুতেই প্যাচ টেস্ট করতে হবে। জ লাইনে, কপালের উপরে খানিকটা তেল লাগাতে হবে প্রথমদিন। যদি কোনো ইরিটেশন না হয়, তাহলে পরদিন অল্প পরিমাণে অয়েল ফেইসে লাগিয়ে ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। এরপর আরও ২ দিন অপেক্ষা করুন। যদি কোনো প্রবলেম না হয়, তাহলে নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।
যদি ব্যবহারের পর ইরিটেশন হয়, তাহলে ৭/১০ দিন অয়েল ব্যবহার বন্ধ রাখুন। এরপর আবার দিন। ৪/৫ দিন অপেক্ষা করে আবার ব্যবহার করুন। আশা করি এভাবে নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে সমস্যা হবে না।
যাদের ফেইসে ব্রণ অলরেডি আছে, তারা ব্যবহারের আগে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
প্যাকেজিং কেমন ছিলো?
অর্গানিকাওন এর এই কুমকুমাদি অয়েলটির প্যাকেজিং বেশ নজরকাড়া। উজ্জ্বল কমলা রঙের প্যাকেটের মাঝে গোল্ডেন ও ব্ল্যাক দিয়ে ডিটেইলস লেখা ছিলো। এটির ভেতরে কাঁচের বোতলটি খুব সুন্দর একটি প্রোটেক্টিভ বাক্সের মাঝে ছিলো। বোতলের মুখটি তেল তোলার জন্য ড্রপারের মতো কাজ করে বলে বাড়তি কোনো ঝমেলাই হয় না। ইনগ্রেডিয়েন্ট ও প্রাইস অনুযায়ী এটি আমার কাছে সাশ্রয়ী বলেই মনে হয়েছে।
অয়েলটির ঘ্রাণ কেমন?
অয়েলটি হালকা কমলা রঙের। যেহেতু এতে কোনো এক্সট্রা কেমিক্যাল, কালার বা সিন্থেটিক ফ্রেগেন্স ব্যবহার করা হয়নি, তাই বিভিন্ন হার্ব ও এক্সট্র্যাক্ট এর একটি ঘ্রাণ রয়েছে। ঘ্রাণেই বোঝা যায় এটি প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদানের মিশেলে তৈরী। অনেকের কাছে ঘ্রাণ কড়া লাগতে পারে, কিন্তু এটি একদম ন্যাচারাল।
সাধারণত আমরা ফেইসে অয়েল ব্যবহারের কথা সেভাবে ভাবি না। তবে ফেইসে অয়েল ইউজ করা এবং ম্যাসাজ করার নানারকম উপকারিতা আছে। ফেইস ম্যাসাজ ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ায়, ডাবল চিন হওয়া থেকে রক্ষা করে, জ লাইন শার্প করে। আর এর সাথে যদি যুক্ত হয় ন্যাচারাল সব উপাদানের কার্যকারীতা তাহলে তো কথাই নেই। তাই স্কিনের যত্নে কুমকুমাদি অয়েল নিয়মিত ম্যাসাজ করে নানারকম বেনিফিটস পেতে পারেন। অর্গানিকাওনের কুমকুমাদ অয়েল পেতে ভিজিট করতে পারেন https://organikaon.com/product/kumkumadi-oil । ত্বক ও চুলের সুরক্ষায় আসল অর্গানিক সব পণ্য এখন সহজেই পৌঁছে যাবে আপনার দোরগোড়ায়।
Leave a comment